আবাসিক মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের জন্য সুশৃঙ্খল ও স্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবেশ নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য কিছু প্রয়োজনীয় সামগ্রী থাকতে হয়, যা প্রতিদিনের জীবনযাত্রাকে সহজ ও নিয়মতান্ত্রিক করে তোলে। আমাদের মাদ্রাসায় আবাসিক ছাত্রদের জন্য নির্ধারিত কিছু ব্যবহারিক সামগ্রী রয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহায়ক। ✅ প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক সামগ্রী: ✔ ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার জন্য: বালতি, মগ, বদনা – প্রতিদিনের ওজু, গোসল ও পরিচ্ছন্নতার জন্য অপরিহার্য। প্লেট, জগ, গ্লাস – স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খাওয়া-দাওয়ার জন্য ব্যক্তিগত ব্যবহার উপযোগী সামগ্রী। মশারী – নিরাপদ ও আরামদায়ক ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয়। ✔ নিয়মতান্ত্রিক ও পরিচ্ছন্ন থাকার জন্য: বেড-বিছানা – সুস্থ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় ঘুমের জন্য প্রতিটি শিক্ষার্থীর নিজস্ব বিছানা। ৩ সেট সুন্নতি পোশাক (মাদ্রাসার নির্ধারিত ডিজাইন ও রঙের) – শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং ইসলামী পরিচ্ছন্ন পোশাক পরার অভ্যাস গড়ে তুলতে। সাদা রঙের ২টি টুপি – নামাজ ও অন্যান্য ইবাদতের সময় ব্যবহারের জন্য। কেন এই সামগ্রী গুরুত্বপূর্ণ? আমাদের মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের শুধু শিক্ষাদানের দায়িত্বই নয়, বরং তাদের দৈনন্দিন অভ্যাস গঠনে সাহায্য করাও আমাদের লক্ষ্য। ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা, শৃঙ্খলা ও ইসলামী পোশাক পরার প্রতি গুরুত্বারোপ করাই আমাদের অন্যতম উদ্দেশ্য। একটি সুস্থ, পরিচ্ছন্ন ও নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাত্রার জন্য প্রতিটি ছাত্রের এই প্রয়োজনীয় সামগ্রী সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক। ঠিকানা: স্টেশন বাজার, ঢাকা বাসস্ট্যান্ড, সোনালী ব্যাংকের সামনে, রহনপুর, গোমস্তাপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ। যোগাযোগ: ০১৭০৬০৬৮১২৩ | ০১৩১৯৩৫৫৩৭৭
একজন শিক্ষার্থীকে প্রকৃত জ্ঞান অর্জন করিয়ে একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষক ও অভিভাবকের ভূমিকা অপরিসীম। শুধুমাত্র মাদ্রাসায় পাঠিয়ে দিলেই একজন শিক্ষার্থী সঠিক শিক্ষা ও চরিত্র গঠন করতে পারবে না। এর জন্য প্রয়োজন অভিভাবকদের সচেতনতা ও নিয়মিত নজরদারি। নিয়মিত যোগাযোগ করুন আপনার সন্তানের লেখাপড়ার অগ্রগতি ও চরিত্র গঠন নিয়ে মাঝেমধ্যে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে আপনি জানতে পারবেন আপনার সন্তান কতটা অগ্রসর হচ্ছে, তার কোনো বিশেষ চ্যালেঞ্জ আছে কি না এবং সে যথাযথভাবে শিক্ষা গ্রহণ করছে কি না। তাই অনুগ্রহপূর্বক নিয়মিত মাদ্রাসার শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করুন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা নিন। অনাকাঙ্ক্ষিত ছুটির পরিহার শিক্ষা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। একদিনের গ্যাপও শিশুর শেখার ধারাবাহিকতাকে ব্যাহত করতে পারে। তাই বাৎসরিক নির্ধারিত ছুটির বাইরে অতিরিক্ত ছুটি নেওয়া শিক্ষার্থীর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। অনুরোধে ছুটি না নেওয়ার চেষ্টা করুন, যাতে আপনার সন্তান তার শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে থাকে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত বিঘ্নের সম্মুখীন না হয়। সন্তানের আমল-আখলাকের দিকে নজর দিন শুধু পড়ালেখা নয়, আপনার সন্তানের আমল-আখলাক উন্নয়ন করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সন্তান যখন বাড়িতে থাকে, তখন তার চলাফেরা, অভ্যাস, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গ ইত্যাদির দিকে বিশেষ খেয়াল রাখুন। নিশ্চিত করুন যে সে মোবাইল, টেলিভিশন, ইন্টারনেট ও সামাজিক মাধ্যম (Facebook, YouTube, TikTok) ব্যবহারে সময় নষ্ট না করে। আজকাল মোবাইল ও ইন্টারনেটের অতিরিক্ত ব্যবহার অনেক শিক্ষার্থীর একাগ্রতা নষ্ট করছে, যা তাদের ভবিষ্যতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে অভিভাবকদের উপস্থিতি শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অভিভাবকগণের মাদ্রাসার ক্যাম্পাসে অবস্থান করা নিষেধ। এটি শিক্ষার্থীদের মনোযোগের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এবং একাডেমিক পরিবেশকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই দয়া করে মাদ্রাসার নীতিমালা মেনে চলুন এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন। আপনার সন্তান আমাদের আমানত আমরা বিশ্বাস করি, প্রতিটি সন্তানই মূল্যবান। তাকে সঠিক পথে পরিচালিত করার দায়িত্ব যেমন আমাদের, তেমনি অভিভাবক হিসেবেও আপনার দায়িত্ব অনেক। আসুন, আমরা একসঙ্গে কাজ করি, যেন আমাদের সন্তানরা সুশিক্ষিত, নৈতিকভাবে শক্তিশালী ও ভবিষ্যতের জন্য যোগ্য হয়ে ওঠে। সন্তানদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে আজই সচেতন হন! ঠিকানা: স্টেশন বাজার, ঢাকা বাসস্ট্যান্ড, সোনালী ব্যাংকের সামনে, রহনপুর, গোমস্তাপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ। যোগাযোগ: ০১৭০৬০৬৮১২৩ | ০১৩১৯৩৫৫৩৭৭
একজন শিক্ষার্থী কেবলমাত্র বই-খাতা মুখস্থ করলেই সফল নয়, বরং তার চরিত্র ও আমল সুন্দর হলে সে প্রকৃত জ্ঞান অর্জন করতে পারে। তাক্বওয়া মডেল মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সুনিয়ন্ত্রিত ও পূণ্যময় জীবনযাপনের লক্ষ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমলের তালিকা নির্ধারণ করেছে, যা প্রতিদিন মেনে চলা উচিত। ✅ ছাত্রদের প্রতিদিনের করণীয়: ☀ সময়মতো নামাজ আদায় করা – পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাযথভাবে জামাআতের সাথে আদায় করা। ☀ দৈনিক কুরআন তেলাওয়াত করা – অন্তত কিছু পরিমাণ কুরআন প্রতিদিন পাঠ করা এবং অর্থ ও তাফসির বোঝার চেষ্টা করা। ☀ সুন্নাতের পাবন্দি করা – প্রিয় নবীজির (সা.) সুন্নাত মেনে চলার অভ্যাস গড়ে তোলা। ☀ সকলকে সালাম দেওয়া – ইসলামি ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখতে এবং ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে। ☀ পিতা-মাতা ও ওস্তাদগণের যথাযথ সম্মান করা – তাদের সাথে সদাচরণ করা এবং কখনোই বেয়াদবি না করা। ☀ নিয়তকে শুদ্ধ রাখা – শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করা। ☀ সদা সত্য কথা বলা – মিথ্যা থেকে বিরত থাকা এবং সততা বজায় রাখা। ☀ নম্রতা অর্জন করা ও অহংকার বর্জন করা – বিনয়ী হওয়া এবং কারও প্রতি অহংকার না করা। ☀ গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা – কেননা এলেম হচ্ছে নূর এবং গুনাহ হচ্ছে অন্ধকার। ☀ ক্লাসের পড়া-লেখা নিয়মিত আদায় করা – ক্লাসে বসে মনোযোগ সহকারে ওস্তাদের কথা শ্রবণ করা এবং পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়া। ☀ আমল সুন্দর হলে জীবন সুন্দর হয়, তাই প্রতিদিন এই তালিকা অনুযায়ী জীবন গড়ার চেষ্টা করুন!
তাক্বওয়া মডেল মাদ্রাসার একজন গর্বিত শিক্ষার্থী হিসেবে আমি নিম্নলিখিত নিয়মগুলো মেনে চলার অঙ্গীকার করছি। আমার আচরণ ও নীতির মাধ্যমে আমি ইসলামের মূল শিক্ষাকে ধারণ করবো এবং মাদ্রাসার সুনাম বজায় রাখবো। অঙ্গীকারনামা: ✅ আমি অত্র মাদ্রাসার সকল নিয়ম-কানুন মেনে চলবো এবং কুরআন ও সুন্নাহভিত্তিক জীবন যাপন করবো। ✅ মাদরাসার স্বার্থে যেকোনো নতুন নিয়ম মৌখিক বা লিখিতভাবে জানানো হলে, তা মেনে চলতে বাধ্য থাকবো। ✅ যদি আমি নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গ করি, তাহলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করলে আমি বা আমার অভিভাবক কোনো আপত্তি তুলবো না। ✅ ওস্তাদগণের অনুপস্থিতিতে কেউ যদি ঝগড়া বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, তার জন্য মাদরাসা কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ✅ বিনা অনুমতিতে অন্যের জিনিস ব্যবহার বা গ্রহণ করবো না। ✅ শিক্ষকের অনুমতি ছাড়া মাদ্রাসার ক্যাম্পাস ত্যাগ করবো না। ✅ অনুমতি ছাড়া যদি মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাই বা বাহিরে হারিয়ে যাই, তাহলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ✅ মাদ্রাসার নির্ধারিত পোশাক পরিধান করবো এবং পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে যথাসময়ে ক্লাসে উপস্থিত থাকবো। ✅ ক্লাসে অনুপস্থিত থাকবো না, বিশেষ প্রয়োজনে যথাযথ কারণ দেখিয়ে প্রিন্সিপালের কাছ থেকে ছুটি গ্রহণ করবো। ✅ যদি এক মাসের বেশি অনুপস্থিত থাকি, তবে আমার ভর্তি বাতিল বলে গণ্য হবে। ✅ মাদরাসা বা রাষ্ট্রের ক্ষতি হয় এমন কোনো আইন-শৃঙ্খলা বা শরীয়ত পরিপন্থী কাজে লিপ্ত হবো না এবং অন্যকে উৎসাহিত করবো না। ✅ মাদরাসার আসবাবপত্রের হেফাজত করবো এবং ক্যাম্পাসের পরিবেশ রক্ষায় সর্বদা সচেষ্ট থাকবো। আমি এই অঙ্গীকারনামার শর্তাবলি স্বজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিষ্কে ও আন্তরিকভাবে গ্রহণ করছি এবং মাদ্রাসার নিয়ম মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।